৫৭ বছর পর জলপাইগুড়ি-ঢাকা রুটে ‘মিতালী’

বেকার জীবনবেকার জীবন
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  02:54 PM, 01 June 2022

বুধবার (০১ জুন) দিল্লিতে ভারতের রেলওয়ে বোর্ডের সম্মেলন কক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নিউ জলপাইগুড়ি জংশনে মিতালী এক্সপ্রেসের প্রথম যাত্রার আনুষ্ঠানিকতা সারেন ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ও বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তারা দিল্লি থেকে পতাকা নেড়ে সংকেত দিলে হুইসেল বাজিয়ে চলতে শুরু করে ট্রেন।

এদিন পশ্চিমবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ি (এনজিপি) স্টেশন অর্থাৎ শিলিগুড়ি থেকে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে ট্রেনটি।দুই দেশের যাত্রী যাতায়াতে তৃতীয় এক্সপ্রেস ট্রেন এই মিতালী এক্সপ্রেস। এর আগে গত দু’বছর বন্ধ থাকার পর ২৯মে থেকে মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেস চালু হয়েছে।

মিতালী এক্সপ্রেসের যাত্রা শুরুর এই মুহূর্তকে দুই দেশের রেল সহযোগিতার ইতিহাসে একটি ‘মাইলফলক’ হিসাবে বর্ণনা করেন ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।ব্রিটিশ আমল থেকেই চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দার্জিলিং থেকে খুলনা হয়ে কলকাতা পর্যন্ত এ রেলপথে নিয়মিত চলাচল করত একাধিক যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন। ১৯৬৫ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের পর তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ব্রিটিশদের ঐতিহ্যবাহী দার্জিলিং মেইলের ’ঝক ঝক ঝক’ পথচলাও এই রুটে দেখেছে দুই বাংলার মানুষ।৫৫ বছর পর ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের ভার্চুয়াল দ্বিপক্ষীয় শীর্ষ সম্মেলনে উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে এই রেলপথ উদ্বোধন করেছিলেন। এর সাড়ে সাত মাস পর গেল ১ অগাস্ট শুরু হয় পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল।

এর মধ্যে ২০২১ সালের মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরে দুই দেশের মধ্যে তৃতীয় ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করা হয়। করোনাভাইরাস মহামারীর ধাক্কা পেরিয়ে ১৪ মাসের মাথায় তা চালু হল।

মিতালী এক্সপ্রেসের পতাকা ওড়ানোর অনুষ্ঠানে ভারতের রেলমন্ত্রী বলেন, একীভূত ঐতিহ্য, একীভূত বর্তমান ও একীভূত ভবিষ্যতের উপর গড়ে উঠেছে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক। সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিম্ন- সব পর্যায়ে দুদেশের সম্পর্ক বর্তমানে বেশ বেগবান।

”এই সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে এবং এই বন্ধনকে আরও জোরালো করার ক্ষেত্রে মিতালী এক্সপ্রেস গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলকের ভূমিকা রাখবে।”ভারতীয় রেলমন্ত্রী বলেন, দুদেশের রেলওয়ের মধ্যে বহু প্রকল্প চলমান আছে। আমরা বাংলাদেশ রেলওয়ের অভিজ্ঞতা থেকেও শিখছি এবং আমাদের ক্ষুদ্র পর্যায় থেকে যথাসম্ভব সহযোগিতা করছি।”

রেলে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের সংখ্যা গত কয়েক বছরে বাড়ার কথা তুলে ধরে অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, কয়েক বছর আগেও মাত্র ৭০০ মালবাহী ট্রেন চলত। এই সংখ্যা এখন ১ হাজার ৬০০টির মত।

পুরো রেলপথ ব্রডগেজ করা, রেলের বিদ্যুতায়নসহ বাংলাদেশের রেলকেন্দ্রিক বিভিন্ন পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে ভারতীয় মন্ত্রী বলেন, “আমাদের রেলওয়ের মধ্যে সম্পর্ক ভবিষ্যতে তাৎপর্যপূর্ণ ফলাফল বয়ে আনবে বলে আশা রাখছি।”

আপনার মতামত লিখুন :